মিসরের চেয়ে বেশি পিরামিড যে দেশে

abc

আফ্রিকার দেশ সুদানের কথা ভাবলে শুরুতেই যে চিত্র চোখে ভেসে উঠবে, তা হচ্ছে যুদ্ধাক্রান্ত এক রুক্ষ মরুভূমির দেশ। গণহত্যার অভিযোগ আর দারফুরের শরণার্থী সংকটের কথা কমবেশি সবাই জানে।

কিন্তু দেশটির বিস্তীর্ণ মরু এলাকায় রয়েছে হাজার বছরের পুরনো বহু পিরামিড। আকারে কিছুটা ছোট হয় সুদানের পিরামিড, যাদের সংখ্যা ২৫০টিরও বেশি। অন্যদিকে মিসরে পিরামিডের সংখ্যা ১৩৮টি।

সম্প্রতি দেশটির তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের একটি অংশ এগিয়ে এসেছে নিজেদের দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে এবং জানাতে।

এমনই একজন মোহামেদ আল মুর, বিদেশী পর্যটকদের গাইড হিসেবে কাজ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম এটা দেখে যে এই পিরামিডগুলো আসলে কেউ দেখেইনি এখন পর্যন্ত। এটাও অবাক করার মতো ব্যাপার যে কেউ এগুলোর কোন দেখাশুনা করে না। এটা আমাদের পরিবারগুলোর নিজেদের প্রাচীন ইতিহাস। আমার পরিবারের কাছ থেকে এই জায়গা সম্পর্কে আমি শুনেছি। শুনেছি এই জায়গাগুলো কিভাবে নারীরা পরিচালনা করতেন, শুনেছি এই জায়গাগুলো একেকটি কত বড় বড় সভ্যতা ছিল!’

মোহামেদ দেশটির তরুণ প্রজন্মকে নিজের দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানানোর জন্য মুক্ত আলোচনা এবং বিনা পয়সায় পিরামিড দেখাবার উদ্যোগ নিয়েছেন।

দিনব্যাপী এসব ট্যুরে নিয়মিত তিনি নিয়ে যাচ্ছেন দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীদের। এদের অনেকেই এখন একাধিকবার করে যাচ্ছেন সেইসব স্থাপনায়।

এই তরুণ পর্যটক দলের কেউ কেউ আছেন, যারা এখন উৎসাহিত হয়েছেন নিজেরা আরো জানতে এবং বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করতে। কেউ আছেন যারা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার ছবি তোলা বা ভিডিও নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।

দেশটির পুরনো শহর গেমাটোনের কাছে মরুভূমিতে রয়েছে বেশিভাগ পিরামিড। প্রায় দুই হাজার বছর আগে এগুলো গড়ে তোলা হয়। তখন সুদানে ‘কুশ’ সাম্রাজ্যের জমজমাট অবস্থা।

মোহামেদ জানান, কিছু পিরামিড আছে ডিনামাইটের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮৩০ সালে ইতালিয় একজন রত্ন শিকারি মূল্যবান রত্নের সন্ধানে গুড়িয়ে দিয়েছিলেন কয়েকটি পিরামিড। অনেক সমাধির জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে।

মোহামেদের প্রত্যাশা, সামনের দিনে নিজেদের পিরামিডগুলো রক্ষার দায়িত্ব নেবে সুদানের তরুণ ছেলেমেয়েরা।

তবে সবচেয়ে উঁচু পিরামিডটিও কিন্তু মিসর কিংবা সুদানে নয়, বরং মেক্সিকোয়। আর কুশি পিরামিডগুলোর বহির্গাত্র সমান নয়; বরং ধাপযুক্ত। অন্যদিকে মিসরের পিরামিডগুলোর বহির্গাত্র মসৃণ। দুই দেশেই কিন্তু একই উদ্দেশ্যে পিরামিড তৈরি করা হয়েছে।

সুদানের পিরামিডগুলো নিয়ে বেশি গবেষণা হয়নি এখনো। অনেক প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজা বাকি।