দেবতাখুম ভ্রমণে কিভাবে যাবেন, কত খরচ?
বান্দরবান জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন ধরনের খুম বা জলাধার। এর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ও বড় খুম হলো দেবতাখুম। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০০ ফিট। দেবতাকুম বা দেবতাখুম বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়িতে অবস্থিত একটি খুম।
অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের তীর্থস্থান এটি। বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের রোয়াংছড়ি উপজেলার শীলবাঁধা পাড়ায় দেবতাখুমের অবস্থান। খুমের গভীরতা এখানে ৫০-৭০ ফিট।
বান্দরবানের আরেক জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান ভেলাখুম থেকে অনেক বড় ও অনেক বেশি বড় হলো দেবতাখুম। মাত্র তিন-চার হাজার টাকার মধ্যেই ডে লং ট্যুরে ঘুরে আসতে পারবেন দেবতাখুমে।
যা দেখবেন সেখানে
দেবতাখুমে যাওয়ার আগেই পড়বে ছোট্ট এক খুম। যার নাম ‘পং সু আং খুম’। এ খুমে সাতার কেটে বা এর সঙ্গে লাগোয়া গাছের শিকড় ধরে ঝুলে ঝুলে যেতে হয় দেবতাখুমে।
এর পথ যেমন সুন্দর তেমনই ভয়ংকর। বর্ষায় খুওমর পানি আরও বেড়ে যায়। তখন সেখানে যাওয়া বেশ কষ্টকর। পিচ্ছিল পাথুরে পথে পা ফসকে বড় ধরনের বিপদে পড়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
ভেলা ছাড়া দেবতাখুমে যাওয়ার উপায় নেই। ভেলা নিয়ে যতো এগিয়ে যাবেন ততোই স্থানটি সরু হবে! এমন জায়গা চোখে পড়বে যেখানে ভেলা দিয়ে পাড় হওয়ার সময় সূর্যের আলোও পড়বে না।
জুন থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত দেবতাখুমে যাওয়ার উপযুক্ত সময়। বৃষ্টির সময় খুম একদম পানি দিয়ে ভরা থাকে, তাই অনেক দূর পর্যন্ত ভেলা নিয়ে যেতে পারবেন!
যেভাবে যাবেন দেবতাখুমে
দেবতাখুম যেতে হলে প্রথমে বান্দরবান যেতে হবে। ঢাকা থেকে এসি বা নন এসি সব ধরনের বাসই বান্দরবান যায়। নন এসির মধ্যে শ্যামলী, সৌদিয়া, ইউনিক, ডলফিন, সেন্টমার্টিন, এস আলম ইত্যাদি পরিবহনের বাস পাবেন।
বাস ছাড়ে কলাবাগান, ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ থেকে। ভাড়া ৮৫০-৯৫০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ১২০০-১৮০০ টাকার মধ্যে।
বান্দরবান থেকে দেবতাখুম যেতে হলে প্রথমে যাবেন রোয়াংছড়ি উপজেলার কচ্ছপতলী আর্মি ক্যাম্পে। প্রথমে বাসে করে রোয়াংছড়ি, পরে ওখান থেকে সিএনজি নিয়ে কচ্ছপতলী যাওয়া যায়। বান্দরবান থেকে প্রতি ঘণ্টায় রোয়াংছড়ির বাস ছাড়ে, ভাড়া ৬০ টাকা।
আর রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলীর সিএনজি ভাড়া ১৫০ টাকার মতো। এছাড়া আপনি চাইলে বান্দরবান শহর থেকে সরাসরি জিপেও কচ্ছপতলী চলে যেতে পারেন। জিপ ভাড়া ৪০০০-৪৫০০ টাকা। এক জিপে ১২/১৩ জন বসতে পারবেন।
কোথায় খাবেন?
বাসস্ট্যান্ডের পাশেই অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট আছে। ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে সকালের নাস্তা হয়ে যাবে। কচ্ছপতলী পৌঁছে ট্রেকিং শুরু করার আগেই দুপুরের খাবারের অর্ডার দিয়ে নিন। নয় তো পরে খাবার পাবেন না। আপনি অর্ডার করলেই মূলত তারা রান্না করবে। মুরগী, ডাল আর আলু ভর্তা পাবেন। খাবার খরচ আসবে ১৮০ থেকে ২২০ টাকার মতো।
কোথায় থাকবেন?
আপনি সকালে বান্দরবান থেকে দেবতাখুমের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে সন্ধ্যার মধ্যেই আবার শহরে এসে পৌঁছাতে পারবেন।