মাউন্ট এভারেস্ট ও লোৎসে অভিযানে যাচ্ছেন চট্টগ্রামের বাবর
বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট ও চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসে অভিযানে যাচ্ছেন চট্টগ্রামের সন্তান বাবর আলী। নেপাল-তিব্বত সীমান্তে অবস্থিত ২৯ হাজার ২৮ ফুট উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্টে অভিযানের মতো দুরূহ একটা কাজে অংশ নিচ্ছেন তিনি। একই অভিযানে ২৭ হাজার ৯৪০ ফুট উচ্চতার মাউন্ট লোৎসে আরোহণ করবেন বলে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।
শনিবার (৩০ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে পর্বতারোহণ ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন অভিযানের সমন্বয়ক ফরহান জামান। বক্তব্য রাখেন ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের সাবেক সভাপতি শিহাব উদ্দীন এবং পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ভিজুয়াল নিটওয়ারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ নুর ফয়সাল।
এই অভিযানে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বাবরের পাশে রয়েছেন এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকেই পর্বতারোহীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে বাবরের হাতে তুলে দেওয়া হয় জাতীয় পতাকা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পর্বতারোহণে বাবরের পথচলা শুরু হয় ২০১৪ সালে। তার আগেও ২০১০ সালে তিনি ট্র্যাকিং শুরু করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের নানা পাহাড়ে ট্র্যাকিঙয়ের মাধ্যমে তার পথচলা শুরু। চট্টগ্রামের পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। এই ক্লাবের হয়েই গত ১০ বছরে হিমালয়ের নানা শিখরে অভিযান করে আসছেন তিনি। ভারতের উত্তরকাশীর নেহরু ইন্সটিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে মৌলিক পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন ২০১৭ সালে।
২০২২ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হিমালয়ের অন্যতম দুর্গম ও টেকনিক্যাল চূড়া আমা দাবলাম (২২,৩৪৯ ফুট) আরোহণ করেন বাবর। বাংলাদেশ থেকে আগে এভারেস্ট আরোহণ হলেও একই অভিযানে এভারেস্ট এবং লোৎসে আরোহণের চেষ্টা হয়নি। সেই চ্যালেঞ্জই নিয়ে গত বেশ কয়েক বছর ধরে নিজেকে হিমালয়ের নানা চূড়ায় অভিযানের জন্য বাবর নিজেকে প্রস্তুত করেন বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাবর বলেন, বেশিরভাগ পর্বতারোহীই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিন্দুতে দাঁড়িয়ে বাকি পৃথিবী দেখার স্বপ্ন দেখেন। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আমি সবসময় চ্যালেঞ্জিং আর নতুন কিছু করতে পছন্দ করি বলেই একই অভিযানে এভারেস্টের সঙ্গে লোৎসে আরোহণের এই প্রচেষ্টা নিতে যাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ১ এপ্রিল অভিযানের উদ্দেশ্যে নেপাল যাবেন বাবর। পর্বতারোহণের প্রয়োজনীয় অনুমতি ও নানা সরঞ্জাম কেনার কাজ শেষ করে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তিনি। সপ্তাহখানেকের ট্রেক শেষে পোঁছাবেন বেস ক্যাম্পে। মূল অভিযান শুরু হবে এখান থেকেই। বেস ক্যাম্প থেকে ওপরের ক্যাম্পগুলোতে উঠানামা করে শরীরকে অতি উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবেন এই পর্বতারোহী। পুরো অভিযানে সময় লাগবে প্রায় দুই মাস।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ কিংবা শেষ সপ্তাহে চূড়ায় আরোহণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন অভিযানের সমন্বয়ক ফরহান জামান। সূত্র : জাগোনিউজ।