মাইনাস ১৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এভারেস্ট অভিযানে ২ বছরের শিশু
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখেন অনেকেই। সেজন্য দরকার হয় দীর্ঘ অনুশীলন, অভিজ্ঞতা, সময় এবং চেষ্টা। তবে এবার ২ বছর বয়সী সিদ্ধি মিশ্র এভারেস্টের বেজ ক্যাম্পে পৌঁছে রেকর্ড গড়ে ফেলেছে। ভারতের মধ্যপ্রদেশের সিদ্ধি মিশ্র মা পর্বতারোহী ভাবনা দেহরিয়ার সঙ্গী হয়েছে এভারেস্ট জয়ের।
এর আগে ব্রিটেনের বাসিন্দা ২ বছরের কার্টার ডালাস এই রেকর্ডটি করেছিল। গত বছর ২৫ অক্টোবর বাবা রস এবং মা জেডের সঙ্গে পায়ে হেঁটে এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে হাজির হয়েছিল সে। যে বয়সে বেশিরভাগ বাচ্চা ঠিকমতো হাঁটতে পর্যন্ত পারেনা সেখানে -১৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গুটি গুটি পায়ে মায়ের হাত ধরে বেসক্যাম্পে হাজির ছোট্ট সিদ্ধি মিশ্র।
মা ভাবনা দেহরিয়া তার মেয়ের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। এত কম বয়সে মাউন্ট এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন সিদ্ধি মিশ্র। সেখানে পৌঁছনোর পর মা ভাবনা দেহরিয়া মাউন্ট এভারেস্টে দেশের পতাকা উত্তোলন করেছেন।
তিনি জানান, চলতি বছরের ১২ মার্চ তার মেয়েকে নিয়ে মদ্যপ্রদেশ থেকে কাঠমান্ডু পৌঁছন। প্রথমে কাঠমান্ডুর লুকলায় এবং তারপর -২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফাকডিং পৌঁছে যান। ১৩মার্চ ফাকডিং থেকে নামচে বাজার পর্যন্ত ট্রেক করেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৪৪০ মিটার দূরত্বে অবস্থিত এই জায়গার সেইসময় তাপমাত্রা ছিল -৬ ডিগ্রি। তবে হাড়হিম করা কনকনে ঠান্ডাও টলাতে পারেনি খুদের অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে। ঠান্ডার মধ্যেও মায়ের হাত ধরে ধীরে ধীর বরফের ঠান্ডা হাওয়া চিরে হেঁটেছে সিদ্ধি।
২৬১০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত ফাকডিং থেকে নামচে বাজারের দিকে যাওয়ার সময় খুব খুশি মনে হাঁটছিল সিদ্ধি। তার ক্রমবর্ধমান ছোট ছোট পদক্ষেপ তাকে এভারেস্টের বেস ক্যাম্পের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, সিদ্ধির প্রতিটা পদক্ষেপ তাদের অ্যাডভেঞ্চারের একটি মাইলফলক হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছিল।
তবে প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে সমদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৮২০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ডেবোচে থেমে যেতে হয়েছিল। ঠান্ডার জন্য সেখানে থাকতে হয়েঠে তাদের। এভারেস্টের বেসক্যাম্পে পৌঁছানো এতটা সহজ নয়, কিন্তু সিদ্ধি এই কাজটি অত্যন্ত ভালোভাবে সম্পন্ন করেছে। এই সময় সিদ্ধি মিশ্রের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল। কারণ তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে উচ্চতয় নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধে হয়।
ভাবনা দেহরিয়া, জানান খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাদের থেমে যেতে হয়েছে। মাইনাস ৭ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ১৬ ডিগ্রি সহ্য করার পর আরও ১১ দিন পর অর্থাৎ ২২ মার্চ এভারেস্ট বেসক্যাম্পে পৌঁছান তারা। এভারেস্ট বেসক্যাম্পের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫১৬৪ মিটার।
বরফের দমকা হাওয়ার মধ্যেও সিদ্ধি ওই বেসক্যাম্পে একঘণ্টারও বেশি সময় কটিয়েছে। এরপর তারা লুকলায় ফিরে আসেন। তারপর সেখান থেকে পৌঁছন কাঠমান্ডুতে।
সূত্র : জাগোনিউজ২৪